বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোটি মানুষের মাঝে সংক্রমিত হওয়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ কেড়ে নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণ। করোনার কবলে পড়ে নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সকল স্তরের মানুষ।
এ বছরেই করোনাভাইরাস এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব।
মৃত ব্যক্তিদের সম্মান জানাতে, আজ আমরা বাংলাদেশের শিল্প ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কয়েকজন স্বনামধন্য ব্যক্তির অবদানের কথা স্মরণ করব, যাদের সবাইকে ২০২০ সাল আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।
ড. আশরাফ সিদ্দিকী:
গত ১৯ মার্চ মারা যান একুশে পদক বিজয়ী আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত বাংলাদেশি লোকসাহিত্যিক, গবেষক, প্রাবন্ধিক এবং কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ১৯২৭ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণ করা আশরাফ সিদ্দিকী। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন এ গবেষক। ১৯৮৩ সালে জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখান থেকেই অবসরে যান।
সাহিত্যিক জীবনে অসংখ্য কবিতা রচনা করেছেন ড. আশরাফ। বাংলার লোকঐতিহ্য নিয়ে করেছেন গভীর গবেষণা। তিনি রচনা করেছেন ৭৫টি গ্রন্থ এবং অসংখ্য প্রবন্ধ।
১৯৪৮ সালে দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে 'তালেব মাস্টার' কবিতা রচনা করে অল্প সময়ের মধ্যেই গণ মানুষের কবি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ছোট গল্প লেখক হিসেবে আশরাফ সিদ্দিকীকে প্রতিষ্ঠিত করে 'গলির ধারের ছেলেটি'। আর এ গল্প অবলম্বনে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় নির্মিত 'ডুমুরের ফুল' চলচ্চিত্রটি পায় জাতীয় পুরস্কার।
বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৮৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি।
ফেরদৌসী আহমেদ লিনা:
টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রের অন্যতম পরিচিত মুখ অভিনেত্রী ফেরদৌসী আহমেদ লিনা কিডনিজনিত সমস্যার কারণে গত ১৮ এপ্রিল ৬৩ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৭৫ সালে একটি তেলের বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে বিনোদন জগতে যাত্রা শুরু। এরপর ১৯৭৮ সালে ‘কালো কোকিলা’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। আবদুল্লাহ আল মামুন প্রযোজিত শহীদুল্লা কায়সারের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত জনপ্রিয় ‘সংশপ্তক’ নাটকেও অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী ফেরদৌসী আহমেদ লিনা।
এছাড়া হুমায়ূন আহমেদ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ দেশের প্রথম সারির নির্মাতাদের নির্দেশনায় অভিনয় করেছেন গুণী এ অভিনেত্রী।
রানা হামিদ:
প্রখ্যাত অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক রানা হামিদ ক্যান্সার এবং কিডনিজনিত জটিলতার কারণে গত ৮ মে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডেরও সদস্য ছিলেন।
‘গ্যাং লিডার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। এছাড়া ‘মা মাটি দেশ’, ‘সবার ওপরে প্রেম’- এর মতো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন রানা হামিদ।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান:
২০২০ সালে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় ক্ষতি ছিল জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের মৃত্যু। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ১৪ মে ৮৩ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় আক্রান্ত ড. আনিসুজ্জামানকে গত ১০ মে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এর আগে তিনি রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ড. আনিসুজ্জামান ছিলেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক।
১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করা ড. আনিসুজ্জামান ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন তিনি।
শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি থেকে প্রদত্ত সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। শিক্ষায় অবদানের জন্য তাকে ১৯৮৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তাকে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পদক প্রদান করা হয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাকে বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।
এছাড়া তিনি ১৯৯৩ ও ২০১৭ সালে দুইবার আনন্দবাজার পত্রিকার দেয়া আনন্দ পুরস্কার, ২০০৫ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট. ডিগ্রি এবং ২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদক লাভ করেন।
২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
আজমেরি জামান রেশমা:
বার্ধক্যজনিত জটিলতায় গত ২০ মে ৮২ বছর বয়সে মারা যান কিংবদন্তি অভিনেত্রী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আজমেরি জামান রেশমা।
১৯৬০ সালে সংবাদ পাঠক হিসেবে কর্মজীবন শুরুর পর ‘জি না ভি মুশকিল’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় তার। এরপর ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘নয়ন তারা’, ‘ইন্ধন’, ‘সূর্য ওঠার আগে’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
মুনীর চৌধুরী অনূদিত উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ টিভি নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতিন পান রেশমা।
তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘শেষের কবিতা’, ‘বৃত্ত থেকে বৃত্তে’, ‘সাঁকো পেরিয়ে’, ‘দিন বদলের পালা’ ইত্যাদি।
চলচ্চিত্র ও টিভির বাইরে মঞ্চনাটকেও দীর্ঘদিন শিল্পনির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন আজমেরি জামান।
মোস্তফা কামাল সৈয়দ:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩১ মে মারা যান ৭৮ বছর বয়সী স্বনামধন্য টিভি ব্যক্তিত্ব ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ।
মোস্তফা কামাল সৈয়দ ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান নির্মাতা ও ব্যক্তিত্ব। ১৯৬৭ সালে প্রযোজক হিসেবে পাকিস্তান টেলিভিশনে যোগ দেন তিনি।
বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে অবসরের পর বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন মোস্তফা কামাল সৈয়দ।
কামাল লোহানী:
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত ২০ জুন মারা যান ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী।
বর্ণাঢ্য জীবনে অনেক পরিচয়ে পরিচিত তিনি। দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব এ মানুষটি ভূষিত হয়েছেন একুশে পদকসহ নানা সম্মানে। তার মৃত্যুতে বাঙালি সংস্কৃতির দিগন্তে শূন্যতার সৃষ্টি হলো।
কামাল লোহানীর জন্ম সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামে। বাবার নাম আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী। মা রোকেয়া খান লোহানী।
কামাল লোহানী প্রথমে কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৪৭ এর দেশভাগের পরের বছর তার পরিবার পাবনা চলে আসে।
সেখানে কামাল লোহানী পাবনা জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। এরপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি ঘটে তার।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে যোগ দেয়ার মাধ্যমে ছাত্রাবস্থায় কামাল লোহানীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৫৩ সালে নুরুল আমিনসহ মুসলিম লীগ নেতাদের পাবনা আগমন প্রতিরোধে আন্দোলন গড়ে তোলায় পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যদের সাথে গ্রেপ্তার হন কামাল লোহানী।
১৯ বছর বয়সে প্রথম কারাগারে যান তিনি। ১৯৫৪ সালে আবারও গ্রেপ্তার হন। কারাবাসের সময় তিনি কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে দীক্ষিত হন এবং আজীবন সেই আদর্শে অবিচল ছিলেন। ১৯৫৫ সালে গ্রেপ্তার হলে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদের সাথে একই কারাকক্ষে বন্দিজীবন কাটান। সেই বন্দী দিনগুলোতেই তিনি সান্নিধ্যে আসেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর।
কর্মজীবনে কামাল লোহানী দৈনিক আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।
তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই দফায় যুগ্ম-সম্পাদক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হন। তিনি গণশিল্পী সংস্থার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে কামাল লোহানী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান এবং সাড়ে চার বছর এ পদে ছিলেন।
এরপর মার্কসবাদী আদর্শে ১৯৬৭ সালে গড়ে তোলেন ক্রান্তি। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পযর্ন্ত তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ছিলেন। ২০১৫ সালে কামাল লোহানী সাংবাদিকতায় একুশে পদক লাভ করেন।
ব্যক্তিজীবনে ১৯৬০ সালে দীপ্তি লোহানীকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের দুই মেয়ে এক ছেলে। তারা হলেন- সাগর লোহানী, বন্যা লোহানী ও ঊর্মি লোহানী। বেশ কয়েক বছর আগে তার স্ত্রী দীপ্তি লোহানী মারা যান।
নিমাই ভট্টাচার্য:
'মেমসাহেব'সহ বহু জনপ্রিয় উপন্যাসের স্রষ্ট্রা সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য মারা যান গত ২৫ জুন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
১৯৩১ সালে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শরশুনা গ্রামে জন্মালেও পরে পশ্চিমবঙ্গেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন জনপ্রিয় লেখক নিমাই ভট্টাচার্য।
প্রথম জীবনে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন নিমাইবাবু। কলকাতায় সাংবাদিকতা শুরু করলেও পরে দীর্ঘ ২৫ বছর দিল্লিতে সাংবাদিকতা করেন তিনি।
সাংবাদিকতায় থাকার সুবাদে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন সেই সময়কার রাজনৈতিক মহল এবং একই সাথে গ্ল্যামারের দুনিয়াকে। সেই অভিজ্ঞতা ছায়া ফেলে তার গল্পে-উপন্যাসে।
নিমাই ভট্টাচার্যের প্রথম গ্রন্থ ‘রাজধানীর নেপথ্যে’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৪ সালে। পরে লেখালেখিকেই পুরো সময়ের পেশা হিসেবে নেন। একটা দীর্ঘ পর্বে বাঙালির পড়ার খিদেকে মিটিয়েছে নিমাই ভট্টাচার্যের রচনা।
উপন্যাস, ছোট গল্পের বাইরে নিমাইবাবু লিখেছেন ‘বিপ্লবী বিবেকানন্দ’র মতো বইও। বাংলায় ‘জনপ্রিয় লেখক’ বলতে যা বোঝায়, নিমাই ভট্টাচার্য ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই তা-ই। তার লেখা উপন্যাসের সংখ্যা ১৫০টিরও বেশি।
এন্ড্রু কিশোর:
গত ৬ জুলাই ৬৪ বছর বয়সে মারা যান দেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।
ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পী। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ১১ জুন রাতে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন তিনি। পর দিন তিনি যান রাজশাহীতে। এরপর থেকে তিনি তার বোন ডা. শিখার বাড়িতে ছিলেন।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। এক সময় গানের নেশায় ছুটে আসেন রাজধানীতে। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।